মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০১০

পারবতী অতঃপর


আমাকে হাত ভেবে ভেবোনা ঘড়ি
নিজেকে বৃত্ত ভেবে ঘোরে না চাকা
আমারও কমতি ছিল জ্যামিতিক জ্ঞান
তোমাকে ভালই দেয় তুমিও কি কম
আমার অধিক হলে তোমাকে দিতাম

আয়নার যোনী নেই চোখই শরীর
দুগ্ধবতী এক ধানের আদল
ধান ও মদের দায়ে সিরাতের পুল
জলের ভেতরে জল ভীষণ জলজ
মাতাল চোখের দিক নিষেধ কাবা
বিবিধ কাছিম যায় ওরসে আবার
এক ডুবে মেঘ ডুব দিয়েছে আকাশ
টুপ করে কিছু হাঁস হল উপহাস

মাছেরও প্রয়োজন ছিল কিছু মাছ
আমার যেমন ঠিক নারীমাংসের
প্রেম টেম ছিল বাওয়া আগে বহুদিন
কামের ভেতরে দেখি দীর্ঘজীবন
ক্রমশঃ হোঁচট খায় দ্বীধাদ্বন্দ্বেরা
তার আগে মদ হলে ভাল হত বেশ
তোমার শরীরে আজ অনেক নাগর
তোমাকে ভালই দেয় তুমিওতো নাও
আমাকে আয়না ভেবে ভেঙ্গেছো ভীষণ



তোমাদের ঈশ্বর ভীষণ কৃপণ
গেলবারও মঙ্গায় সে ছিল নীরব
আয়োজন দেখেছিল গোর ও শ্মশান
আমার কবিতায় হয়নাতো ধান
শরীরওতো কোনদিন হল না লাঙ্গল
উত্তরাধিকারে ছিলনাতো ভিটে
আমার মায়েরা থাকে বেশ্যাপাড়া
পিতারা কাতর ঘুমে গতানুগতিক

অগত্যা স্থিতি প্রেমিকা যে গ্রাম
এই গ্রামে কোন এক গৃহস্থ ঘরে
সারারাত চাষাবাদে তৃপ্ত সে নারী
আবারও গাভীন হলে পানি পড়া খায়
আমিতো ধানের মোহে হয়ে গেছি ধান
যেমন নাড়ির সাথে আজীবন নারী
আখড়ায় এ আশ্রয়ে যত ধারা জারি

ঘাস ও মাটির তোড়ে বৃষ্টি প্রবল
আসমান ভিজে ভিজে হয়ে গেল কাক
দুপুর গড়িয়ে দিন এইতো সেদিন
মেঘগুলো ভেজা ভেজা উড়ুক্কু বাক




ঘড়িতে তখন ঠিক অজানা সময়
উঠতি মেয়েটা হল যৌবনবতী
প্লেটোর সামনে খাঁড়া অন্ধ হোমার
রুশোও কবিতা ভয়ে বেশ্যা বানায়
আমিতো কবিতা করি কবিতার ভুল
সফোক্লিস ইডিপাস লিখে রেখে যায়
নুহের প্লাবন শেষে আমি ও আদম
কিলবিল করে সাপ হাবিল ও কাবিল
তুমি কি তোমার সেই ভাইয়েরও কাতিল

ফিরবে কি নাকি আর ফেরা হবে না
জুডাসেরা গৌরবে ভাঙ্গছে প্রাচীর
তায়েফের ময়দানে কবিতার গান
নবী মুহাম্মদ বান্দা হাজির
হেরা পর্বত থেকে এনেছে কোরআন
কবিতাও ম্লান দেখি ওহী ও সুরায়
অন্ধ কানাই এক ছিল কিউপিড
আমিও অন্ধ নাকি প্রেমিক যখন


এসো ধান গুণবান ধান হয়ে এসো
রুপবান কৃষাণীর হাতে হইও ভাত
আমিও জাবর কাঁটি আজীবন ভেতো
মদের অপেক্ষারা ঘোরে সারারাত




আযানটা পড়ে গেল মসজিদ পর
মন্দিরে আহ্নিকে বাজে পুরোহিত
মানুষের কান শোনে সেই সে বয়ান
মিথ্যায় আলোকিত যাবতীয় মিথ
হাড়গুলো তবু জানে কবিতা খোরাক
যদি হয় কতিপয় শব্দেরা খুনি
তোমাকে নামায ভেবে পড়ে নিই আবার
অন্তরে নিয়ত তোমারে চিনি

নজরবন্দী হয়ে পড়ে থাকে চোখ
চোখের ভেতরে এক চোখের বালি
সে বালিতে ইমারত যদি হয় হোক

যাদুতে ভ্যানিশ সবই যাদুবাস্তব
শরীর বন্ধের আরবী সুরা
ঢেলে পান পেয়ালায় হোক আয়োজন
উড়াল দিল যে মন সেওতো ধরা

ঘর্ষণে কাঁচা স্মৃতি ঝলসালো খুব
কবিতার সবই ছিল ছিল না শরীর
তাইতো নারীর কাছে নিতে হল ঋণ
নারীর প্রতিজ্ঞা সেতো নারীর মতই
কখনো ঠুনকো ঠিক কখনো গভীর
আবেগ ও উত্থানে কবিতা মৃত
নবাগত ওই ধানে আমিও অপার
পারাপার ফেলে আসি ফেলে আসি চোখ
তোমাকে ভুলবো যদি ধানই মদ হোক

বেপরোয়া এক ধান ভীষণ নতুন
একফাঁকে শুয়ে নেবে কৃষাণীর সাথে
মদের অপেক্ষায় যেমন এ ধান
পঁচে পঁচে স্বাদু হই এমন বিষাদে

আমার শরীর জেনো আকাশমুখী
মাধ্যাকর্ষণও লজ্জা পাবে
মদেরও অনেক আগে এই মাতলামি
তোমাকে পাওয়ার আগে তোমাকে যেমন

তোমাকে চোখ ভেবে দেখিনি কখনো
তুমিতো শরীর হয়ে পরিধেয় করো
অন্তর্বাস নয় করেছো বোতাম
এমন মদের দিনে ঠিক চিনতাম

বেহুলা নৃত্য হবে মাতাল চিতায়
তুমি না এলেও মদ হবে কিন্নরী
বরং চলেই এসো যদি আসা যায়
হরণ যে হবে না দিই না অভয়
খালি হলে খুলে এসো শেষ পরাজয়

এইবার ঠোঁটে ঠোঁট তোমাকে আমি
তোমার ভেতরে যেতে যাই যতদুর
তোমাকে সঙ্গে করে তোমারই ভেতর
আরো ভেতরে গিয়ে তবে পাই সুর

যতটা ভেতরে কেউ পারে না যেতে
তোমার অহংকার হয়ে যাক মদ
আমিও অহংকারী মাতালের ঠোঁটে
চিবুকে লিখতে পারি কামড়ের দাগ
তুমি যাকে ভালবাসা বলনি কখনো

মদের অপেক্ষায় শুধু কিছু ধান
যত্নে ও যতনে কৃষাণীর হাতে
তোমাকে ভাবিনি যে আসবেও তুমি
আমাকে পাওয়া যায় যে কোন রাতে


বালিকার চোখে চোখ বালিকাতো ধান
এইবার দুধধান বালকেরই মত
উদোম আকাশ দেখে হেসেছে ভীষণ
নরকের কীটগুলো নাশকতা যত

মদের অপেক্ষায় ধান হয়ে থাকি
তোমার প্রতীক্ষায় যেমন মাতাল
চোখের জলেই হত মহুয়ার দাম
মহুয়া কোথায় পাবো এমনই আকাল


চোখের রঙের মত যত চোখ রঙ
ধোঁয়ারা জানতো এটা নিকোটিন লাল
লাল মানে নীল নয় নীল কোন নারী
তুমি কি ভীষণ লাল আজও লাল শাড়ী

তুমি কি মদ ভাবো অথবা কবিতা
তোমাকে দয়িতা ভাবি যদিও দ্বিতীয়া
তোমার পুরুষ যে সেও কি সে জন
বরাবরই বেড়ে গেছে মাংসের দাম
আমার অধিক হলে তোমাকে নিতাম

তার চেয়ে এই মদ এই পথ ভালো
আমিতো পুরুষ নই বেমালুম কবি
এমনও মদের দিনে কোনদিন এসো
তোমার শহরে গেলে সযতনে রেঁধো
স্মৃতিরা সেদ্ধ হলে সুন্দর ছবি।

আমি এমনই জনক হায় দুঃখজনক
উল্লেখযোগ্যতা দুরহ ভীষণ
দুর হোক দুরত্ব ওহে দুর নারী
তার চেয়ে এই বেশ কবিতা ও মদ

পাখীদের ডানা বেশ উড়ে যায় দেখি
দুরাকাশ দুরাভাস দেয় হবে মেঘ
মেঘ মানে বৃষ্টিরা ভেজাবে আবার
গাংচিল ভেসে যাবে গলাকাঁটা গ্রাম
এক ডাকে মেঘ ডাক উঠে আসে কই
ভেজা মাটি বুক খুলে বুক পেতে ঐ

ঈশ্বর দাঁড়াবার পা নেই আমার
তোমাকে দুষেছি আমি জন্মান্তর
তবু আজ হুঁট করে নত হয়ে যাই
কেন নত হই তুমি বুঝেছো কি তা


অগত্যা মেঘমাখা উঠে আসে রোদ
প্রকৃতি জানেও দেখি বিবেচনা জ্ঞান
জলেরা বিদায় নিয়ে উঠে পড়ে মেঘ
রিভার্স সিনের মত জ্বেগে ওঠে ধান

কৃষকের বুক কবে হয়ে গেছে ধান
শিরস্ত্রাণের মত জ্বলেছে কপাল
এমন মাতাল আমি ঘুমিয়েছি রাত
কৃষাণী আগলে বুকে যত দুধধান
এমন সোনালী দিন ছিল কোনদিন
তেমন ম্মৃতিতো ঠিক মনে পড়ে না
তোমার ভেতরে ছিল লাল আর নীল

অবলম্বন হোক মুঠো মুঠো ধান
যদিবা ঋণাত্মক প্রকৃত আধান
এই বুক চুম্বক হয়ে গেছে কবে
ঠোঁটের কি দায় খোঁজে তোমার চিবুক
মরণকে ছুঁয়ে দিতে অমৃত এ মদ
এই ঠোঁট কোনদিন কারো লাল ঠোঁটে

এই ধান তবু দেয় সেই আশ্বাস
অপেক্ষা ক্লান্তিতে শুয়ে পড়ে পাশে
তেমন ছলনা নেই যা ছিল তোমার
তুমি যে নিছক নারী এই ভালবেসে।

তুমি কি ধানের মত গান হতে পারো
ধানের মতই বাজো অন্যের হাতে
একদিন ভাত হয়ে রাত হয়েছিলে
আমাকে খেতে দিয়ে তোমাকে খাওয়া
সেই ভাত স্মৃতি পঁচে হয়ে যায় মদ
হয়নি যাওয়া আর উনুনের কাছে
কবিতা আছে আর কেউ না থাকুক
তোমাকে নারী ভেবে নারী ভুলে গেছি
পুড়ে পুড়ে ক্রমাগত দুঃখ আসুক।

আমারও শৈশব মনে পড়ে খুব
কাটতে কাটতে কেটে গিয়েছে সময়
কপাল কাটতে গিয়ে চলে গেছি দুর
ভেতরে কেটেছে কবে বুঝিনি সে লাল
তুমিও বালিকা ছিলে বালকের মন
বুঝেটুঝে চোখ বুজে চুমু দিয়েছিলে
আমিও জড়িয়ে ধরে অজানা সে ওম
স্মৃতিরা আবছা হয়ে মুছে মুছে গেলে
তোমার চোখের মত হয়ে গেছি ঘুম

জানতো কে অন্ধ সে অন্ধতা চেয়ে
বেদুঈন এই দিন তবু খোঁজে ঘর
তৃষিত সুরার মত পান করে গ্রাস
টগবগিয়ে আসে ঘোড়াদের দৌড়
কোন সে ঘোড়ায় তুমি হয়েছো সওয়ার



বরাবরবই উঠে আসে সুদ ও আসল
তোমাকে ভুলতে ভুলি ভুলে যাওয়াটুকু
তবু যদি তোমাকেও ভুলে যাওয়া যেত


এখন নতুন ভোরে তুমিওতো জ্বাগো
তোমার বিছানা জানি জ্বাগে রাতভর
তোমাকে জ্বাগিয়ে কে ঘুমিয়েছে পাশে
ভালবাসে সেও কি আমি তোমাকে যেমন

দলে বলে তবু যেন না আসে আকাল
তুমিও যেমন কাল যতটা আপন
কাল ও চক্রে পর হয়ে গেছো দুর
ততটা দুরেই যাক ভাত ও অভাব
হাভাতের হা ভরে এক মুঠো ভাত
কাঁচা পেঁয়াজের খোসা তোমার শাড়ি
তোমার নাড়ির সাথে আজীবন নারী


দুঃখতা হাঁটু গেড়ে আরো এক পেগ
ফিরে এসে চায় কিছু সাজানো সময়
ফেরাতে পারিনি শুধু তোমার যাওয়া
ফেরারা আসবে ফিরে এবং সেও
করুণা করার মতো এতটুকু স্মৃতি
এই বুকে একবার ফেলে রেখে যেও

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন